|
|
|
|
|||||||||||||||||||||||||||
|
|
|||||||||||||||||||||||||||||
|
বত'মান শিক্ষা পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তণ সাধিত হলেও মানুষের মৌলিক মানবিক মূল্যবোধের প্রতি গুরূত্ব না দিয়ে বাবা মাদের লক্ষ্য থাকে কীভাবে সন্তানকে টাকা Income এর যন্ত্র বানানো যায়। ফলে সন্তানকে প্রকৃত মানুষ (মনুষ্যবোধ, সৎ, সহনশীল, যৌক্তিক) হিসেবে দীক্ষা না দিয়ে কীভাবে ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী বানানো যায় সে প্রচেষ্টা থাকে বেশী। আমরা ভুলে যাই প্রত্যেক শিশু তার স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে তার সে বৈশিষ্ট্যকে ঘুরিয়ে দিলে তাতে হীতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। প্রতি জানুযারি মাস এলেই অভিভাবকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন কীভাবে কোমলমতি শিশুকে অসম প্রতিযোগীতার মধ্যে কোনো ডাকসাইটে নাম হওয়া স্কুলে ভর্তি করবেন তার ওপর। শিশুর মানসিক পরিপক্কতা থাক আর নাই থাক। ভর্তি করা চাই- ই চাই। ভর্তি করেই শেষ নয়, তাকে কীভাবে শ্রেণীতে প্রথম বানানো হবে সেদিকেও চলে অভিভাবকদের মধ্যে এক স্থায়ু প্রতিযোগ। পরীক্ষা ঘনিয়ে আসলে যতটা না শিশুরা অস্থির থাকেন তার চেয়ে বেশী নিদ্রাহীন থাকেন সন্তানের মায়েরা। ফলে সন্তানের ওপর থাকে এক ধরনের মানসিক চাপ। ক্রমে শিশু তার আপন বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ধীরে ধীরে নিজস্ব সৃজনশীলতাও এক সময় অবদমিত হয়ে পরিণত হয় একটি নিরেট রোবটে; যা পরিবার কিংবা সমাজের জন্য কাম্য নয়। এ লেখাটির মুল উদ্দেশ্য শুধু তাত্ত্বিক আলোচনা নয়। কীভাবে একজন সুস্থ শিশুকে স্বাভাবিক নিয়মে বিকশিত করানো যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে শিশুর মানসিক বিকাশের স্তর, অভিভাবকের করণীয় ও শিক্ষকের দায়িত্ব সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা করা হলো। শিশুদের নিয়ে যুগে যুগে অনেক গবেষণা হয়েছে। এর মধ্যে সুইডিশ জীব বিজ্ঞানী জ্যাঁ পিয়াজের মতামতটি অধিক প্রনিধানযোগ্য। তার মতানুসারে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের স্তর বিন্যাস নিম্নে দেয়া হলো।
অর্থাৎ একজন অভিভাবক তার সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপরিল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করলে সহজেই বুঝতে পারবেন তার সমত্মানটি কোন ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে বড় হচ্ছে। তার সমত্মানের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলো কী? সমত্মানের শিক্ষার কোন শাখার প্রতি ঝোঁক, সে কী করতে চায় ইত্যাদি। শিশুদের মানসিক পরিপক্কতার স্তর শুরু হয় ৩ বছর থেকে এবং শেষ হয় ১১ বছর বয়সে। তাই সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর পূর্বে একজন অভিভাবকের করণীয় এবং লক্ষণীয় দিক হলো:
পিতামাতার যা করা উচিত · শিশুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করম্নন। ছোট ছোট সহজ শব্দ, স্পষ্ট করে ধীরে ধীরে বারবার শিশত্মকে শোনান · ছোট ছোট ছড়া গান আর দুই-তিন লাইনের গল্প শিশত্মকে শোনান। · শিশত্মকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা দিয়ে খেলতে শেখান । · শরীরের বিভিন্ন অংশের নাম বিভিন্ন রংয়ের নাম পশত্মুপাখির নামমাছের নাম খেলনার নাম ফুল ফল দিন মাশের নামবলতে শেখান । · ভালো স্কুলে শিশত্মকে পড়াতে পাঠান ,পরীক্ষার ব্যবস্থা করম্নন শিক্ষকদের সাহায্য নিন । কোনসমস্যা হলে শিক্ষকদের বুঝিয়ে বলুন শিশুকে বিষেভাবে যত্ন নিতে। · প্রত্যেকটি ছোট ছোট কজের জন্য প্রশংসা করুন বেশী বেশী । · কথা বলা গান গওয়া বই পড়া ইত্যাদির মাধ্যমে শিশুর ভাষা শোখায় উৎসাহিত করুন । · শিশুর আত্মবিশ্বাস বৃদ্বির জন্য সুযোগ করে দিন। যেমন ছবি আকা ,কাগজ, মাটি ও পুরাতন কাপর দিয়ে বিভিন্ন জিনিসে তৈরি করা । · শিমত্মকে সামাজিক শিক্ষা দিন । যেমন-সালম দেওয়া ,মেহমান এলে বসতে বলা ইত্যাদি, শেখানো ও পালন করতে উৎসাহিত করুন। · শিশুরা সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে কি ধরনের আচরণ করবে তা শেখানো এবং ঘরের বাইরে অন্য শিশুর সঙ্গে খেলার সুযোগ করে দিন । · শিশুকে নিজ থেকে কিছু পছন্দ করা ও দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ করে দিন। · ভালো কাজের জন্য শিশুকে প্রসংসা আদর ও পুরষ্কার দিন এবং মন্দ বা অনাকাঙ্খিত কাজের জন্য আদর প্রসংসা বন্ধ রাখুন · সময় পেলে শিশুকে নিয়ে ঘুরতে যান । · প্রত্যেক পিতামাতার উচিৎ শিশুকে সময় দেওয়া ও শিশুর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা।
পিতামাতার যা করা উচিত নয়:
¨ শিশুকে মারবেন না, বকা দিবেন না ; ¨ অন্য শিশুর সঙ্গে শারীরিক গঠন য়েমন শিশুর চেহারা , গায়ের রং ,নাকের সৌন্দয্য, স্বাস্থ্য ও বুদ্ধি নিয়ে তুলনা করবেন না এসব কথা শিশুর মধ্যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়। এতে করে শিশুটি হীনমণন্যতায় ভুগতে পারে । ¨ শিশুর সমালোচনা করবেন না । ¨ শিশুকে বাড়তি চাপ দিবেন না। যেমন- ও ফার্ষ্ট হয়েছে। তুমি কেন পারলে না, তোমাকে ক্লাসে প্রথম হতে হবে,খেলায় জিততেই হবে। এ কথাগুলো শিশুর মধ্যে অতিরিক্ত টেনশনের জন্ম দেয়। এতে করে শিশু অস্থির হয়ে যেতে পারে ,ঘুম সমস্যা হতে পারে ,তার ব্রেনের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে । ¨ শিশুরা ভুল করতে পারে কিন্তু উপহাস করবেন না ¨ শিশুকে নিন্দা করবেন না । ¨ শিশুর সামনে কখনই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, পারিবারকি কলহ, রাগারাগী ও মারামারি করবেন না। এতে শিশু বেশি জেদি হয়ে যাবে । ¨ শিশুর সামনে সিগারেট ও অন্যান্য নেশাকরবেন না । ¨ শিশুর উপর সার্বক্ষণিক নজরদারি ও খবরদারি করবেন না । এতে শিশু ফাকি দেওয়ার চেষ্টা করবে।
|
||||||||||||||||||||||||||||
|
|||||||||||||||||||||||||||||